নিজস্ব প্রতিবেদক : মিয়ানমার রাখাইন রাজ্য থেকে সেদেশের সেনাবাহিনীর ধর্ষণ, লুটপাট, হামলা ভয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা নারীদের ধর্ষণ ও নির্যাতনের প্রমান পেয়েছে জাতিসংঘের চিকিৎসকরা। জাতিসংঘের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের বরাত দিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়, রাখাইন রাজ্যে সহিংসতার শিকার অনেক নারী সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছেন। বাংলাদেশে এই নারীদের চিকিৎসা সেবা দেয়ার সময় চিকিৎসকরা অনেক নারীর শরীরেই যৌন সহিংসতার ক্ষত দেখতে পেয়েছেন।
মিয়ানমারে যৌন সহিংসতার শিকার হয়ে বাংলাদেশ আসা রোহিঙ্গা নারীদের স্বাস্থ্যসেবা ও সুরক্ষা দিচ্ছেন- কক্সবাজারে এমন আটজন স্বাস্থ্যকর্মীর সঙ্গে কথা বলেছে রয়টার্স। ওই স্বাস্থ্যকর্মীরা জানান, গত আগস্টের শেষ সপ্তাহ থেকে এ পর্যন্ত ধর্ষণের শিকার ২৫ জনেরও বেশি রোহিঙ্গা নারীকে চিকিৎসা দিয়েছেন।
চিকিৎসাকর্মীরা আরও জানান, চিকিৎসা নেয়া রোহিঙ্গা নারীদের সবাই বলেছে, মিয়ানমারের সেনা সদস্যরাই তাদের ওপর এই বর্বরতা চালিয়েছে।
জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) অধীনস্থ একটি অস্থায়ী শরণার্থী ক্যাম্পে পরিচালিত একটি ক্লিনিকের চিকিৎসকরাও বলেছেন, তারা শত শত নারীকে চিকিৎসা দিয়েছেন যারা গত বছরের অক্টোবর ও নভেম্বরে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনা বাহিনীর অভিযানের সময় যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছিলেন।
প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, গত ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের বেশ কিছু পুলিশ চৌকিতে হামলার জন্য রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের দায়ী করে রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনী অভিযান শুরু করলে সহিংস পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এই সহিংসতা থেকে বাঁচতে পালিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করে দলে দলে বাংলাদেশে ঢুকতে শুরু করে রোহিঙ্গারা।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর অভিযান শুরুর পর থেকে প্রায় ৪ লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গা সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা বলছে, বিদ্রোহীদের দমনের নামে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা মুসলমানদের হত্যা, নির্যাতন ও ধর্ষণ করছে এবং তাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিচ্ছে। এ প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘ বলছে, রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ‘জাতিগতভাবে নির্মূল’ করছে মিয়ানমার।